1. zunaid365@gmail.com : Natore Times :
সংবাদ শিরোনাম :
সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তারেক রহমানকে দেশে আনতে হবে: দুলু সিংড়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৃক্ষ রোপন ও বিতরন তরুণদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতা চান ড. ইউনূস জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আরো সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন: হোয়াইট হাউস ‘দেশে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা হলেই আমার সন্তানের আত্মদান সার্থক হবে’- শহিদ মানিকের বাবা লা লিগা: দারুণভাবে ফিরে এসেও মাদ্রিদের সাথে পেরে উঠেনি আলাভেস দশ বছরের জয়খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন বাংলাদেশের ফের নিষ্ক্রিয় জিমেইল অ্যাকাউন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে সেশনজটের শঙ্কা শত শত অবৈধ ব্লাড ব্যাংকে চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত বিক্রি

টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১

ভারত থেকে করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাচ্ছে। দেশটির সেরাম ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের টিকার মজুদ বেড়েছে। ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তারা টিকা রপ্তানি করতে প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও টিকা পেতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা আজ সোমবার অথবা আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে দূর হবে।

এদিকে প্রাণঘাতী করোনার প্রতিষেধক টিকার মজুদ ফুরিয়ে আসছে। বাংলাদেশের হাতে থাকা এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকার মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৭০ লাখ ৮০ হাজার ডোজ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৭ লাখ ১৪ হাজার জন এবং ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ডোজ দ্বিতীয় ডোজও নিয়েছেন। মজুদ ৩১ লাখ ১৯ হাজার টিকা দিয়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে। এই সময়ের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী টিকা না এলে অনিশ্চয়তায় পড়বে বাংলাদেশের চলমান টিকাদান কর্মসূচি।

স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র জানায়, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে, টিকা রপ্তানি করতে তারা এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে না নিলে তারা টিকা রপ্তানি করতে পারবে না। এর পরই কূটনৈতিক চ্যানেলে টিকা পেতে তৎপরতায় নামে সরকার। কূটনৈতিক চ্যানেলে আলোচনার পর বাংলাদেশ টিকা পাওয়া নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ আবার কবে নাগাদ টিকা পাবে কিংবা কত টিকা আসছে, সেসব বিষয় আজকালের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে।

চুক্তি অনুযায়ী মার্চ পর্যন্তই আরও ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য সেই টিকা পেতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই টিকা এলে প্রথম ডোজ নেওয়া সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সমকালকে বলেন, মার্চ পর্যন্ত বকেয়া টিকা পেতে বেক্সিমকোর মাধ্যমে সেরামকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও টিকার জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। আশা করি, টিকা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা চলছে দু-এক দিনের মধ্যেই তা দূর হবে।

বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত আজ :ভারতের নিষেধাজ্ঞার পর টিকা পেতে বিকল্প একাধিক উৎসের খোঁজে নেমেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে রাশিয়া ও চীনের টিকা পেতে সরকারের হাইকমান্ড থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই দুটি দেশের পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। রাশিয়ার টিকা পেতে সরকার আগ্রহী। কারণ প্রতিবেশী দেশ ভারত নিজেদের দেশে প্রয়োগের জন্য রাশিয়ার টিকার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। এরপর বাংলাদেশও ওই টিকা পেতে তৎপরতা শুরু করেছে। তবে রাশিয়ার দূতাবাস থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে।

রাশিয়ার টিকার একটি ডোজের দাম পড়বে ১২ ডলারের মতো। ওই টিকার দুটি করে ডোজ নিতে হবে। তাহলে জনপ্রতি টিকা দিতে সরকারের ব্যয় হবে ২৪ ডলারের মতো (প্রায় ২০৫০ টাকা)। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দুই ডোজের দাম পড়ছে ১০ ডলার করে।

স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, মূল্য বেশি হলেও সরকার রাশিয়ার টিকা নেবে। কারণ চলমান টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে ওই টিকা সংগ্রহ করা ছাড়া বিকল্প নেই। দেশে ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। ওই দুটি টিকা সংরক্ষণ করতে মাইনাস ৩০ থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস মাত্রার রেফ্রিজারেটর প্রয়োজন।

কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের রেফ্রিজারেটর আছে মাত্র কয়েকটি। এ ছাড়া ওই টিকার মূল্যও রাশিয়ার টিকার তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশে বিদ্যমান ব্যবস্থাপনাতেই রাশিয়ার টিকা সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে রাশিয়ার টিকার কার্যকারিতাও ভালো। এ কারণে বিকল্প হিসেবে রাশিয়ার টিকা সরকারের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে আছে চীনের টিকা। রাশিয়ার টিকার নিশ্চিত করার পর পরবর্তী বিকল্প হিসেবে চীনের টিকা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে সরকারের হাইকমান্ড।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সমকালকে বলেন, সেরামের বিকল্প হিসেবে রাশিয়া ও চীনের টিকার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে। আজও আলোচনা হবে। রাশিয়ার টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা কম। সে ক্ষেত্রে তারা কাঁচামাল সরবরাহ করলে বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন করা হবে। ওই টিকা দিয়ে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। আর চীনের উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। চীন টিকা দিতে চাইলে নেওয়া হবে। আবার কাঁচামাল সরবরাহ করলেও বাংলাদেশ উৎপাদন করবে। সুতরাং বিকল্প হিসেবে এই দুটি টিকা আমরা পেতে চাই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, টিকা নিয়ে টাকার কোনো সংকট নেই। দাতা সংস্থাগুলো টাকার জোগান দিতে প্রস্তুত। শুধু উৎস নিশ্চিত করতে পারলেই টিকা পাওয়া সম্ভব হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সম্প্রতি ইউএনডিপির অর্থায়নে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার তিন কোটি ডোজ কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এই টিকা আগামী সেপ্টেম্বরের আগে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ জনসন অ্যান্ড জনসন আগস্ট মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে টিকা দিতে চুক্তি করেছে। এ ছাড়া উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

টিকা মজুদের চিত্র :করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ সাময়িকভাবে স্থগিত করে ভারত সরকার। কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশসহ ১৮০টি দেশ টিকা পাবে। সেই টিকাও সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরবরাহের কথা। কিন্তু ভারতের রপ্তানি স্থগিতের সিদ্ধান্ত কোভ্যাক্সের আওতায় টিকাও পাচ্ছে না। বাংলাদেশেরও কোভ্যাক্স থেকে মে মাসের মধ্যে এক কোটি ৯ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। সেই টিকা পাওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত বছরের নভেম্বর মাসে সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়। ওই টিকার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ দেশে আসে গত ২৫ জানুয়ারি। এর আগে ভারত সরকার বাংলাদেশকে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠায়। ওই টিকা হাতে পাওয়ার পর ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি পরীক্ষামূলক টিকাদান করা হয়। আর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।

এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে কেনা টিকার আরও ২০ লাখ ডোজ আসে। আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশকে আরও ১২ লাখ ডোজ উপহার দেয় ভারত। সব মিলিয়ে সরকার এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, কেনা টিকার তিন কোটি ডোজের মধ্যে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে আসার কথা। কিন্তু জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে আসে ২০ লাখ ডোজ। ৩০ লাখ ডোজ কম আসে। মার্চ মাসে কোনো টিকা আসেনি। এ হিসাবে মার্চ পর্যন্তই চুক্তি অনুযায়ী ৮০ লাখ ডোজ টিকা কম পেয়েছে বাংলাদেশ। আর এপ্রিলের টিকা আসবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে টিকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী টিকার বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন। সংশ্নিষ্টরা মনে করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পর টিকা নিয়ে বাংলাদেশের অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে। আজকালের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, টিকা পেতে জোরালো তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। টিকার বিষয়ে দ্রুতই সুখবর আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।

Site Customized By NewsTech.Com