লকডাউন চলাকালীন কর্মহীন প্রতিটি পরিবার পাবে নগদ ৫০০ টাকা। লডাউন বাড়লে কর্মহীন প্রতিটি পরিবার পাবে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের পাকেট। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সহায়তা পাবে তারা। মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সাত দিনের লকডাউনের কারণে যারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, দেশের এই সব কর্মহীন মানুষের সহায়তায় সরকার ইতোধ্যে ৫৭২ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যা এরই মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি কপোরেশনের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পৌঁছে গেছে। দেশের প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ পরিবারকে ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) কর্মসূচির আওতায় এ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
তবে, কঠোর লকডাউন সাত দিনের বেশি বাড়লে প্রতিটি কর্মহীন পরিবারকে দেওয়া হবে খাবারের প্যাকেট। এর মধ্যে থাকবে ১০ কেজি চাল, এক কেজি তেল, এক কেজি ডাল, চার কেজি আলু, এক কেজি লবণ। সহায়তার এই সব পণ্যপ্যাকেট জনপ্রতিনিধিরা পৌঁছে দেবেন নিজ নিজ এলাকার তালিকাভুক্ত কর্মহীন পরিবারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, পরিবারপ্রতি ৪৫ টাকা কেজি দরে ১০ কেজি চালের সমমূল্য, অর্থাৎ কার্ডপ্রতি ৪৫০ টাকা হলেও ৫০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হবে ৫০০ টাকা হারে। যা পাবে কর্মহীন প্রতিটি পরিবার। এটি করোনাকালীন প্রথম উদ্যোগ।
জানা গেছে, দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯২টি উপজেলার জন্য ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৩টি কার্ড এবং ৩২৮টি পৌরসভার জন্য ১২ লাখ ৩০ হাজার ৭৪৬টি কার্ডসহ মোট এক কোটি ৯ হাজার ৯৪৯টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ৪৫০ কোটি ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পরিবারপ্রতি ১০ কেজি চালের সমমূল্য, অর্থাৎ কার্ডপ্রতি ৪৫০ টাকার সঙ্গে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা হারে আর্থিক সহায়তা দিতে উপজেলাগুলোর জন্য ৩৯৫ কোটি ৬ লাখ ৪১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং পৌরসভাগুলোর জন্য ৫৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা এরইমধ্যে পৌঁছে গেছে।
একইসঙ্গে কোভিড পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্য সহায়তার জন্য ১২১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ৬৪টি জেলার ৪ হাজার ৫৬৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হারে মোট ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা মানবিক সহায়তাও দেওয়া হবে।
সারাদেশের ৩২৮টি পৌরসভার অনুকূলে মোট ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রতিটি পৌরসভার জন্য ২ লাখ টাকা, ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রতিটি পৌরসভার জন্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রতিটি পৌরসভার জন্য এক লাখ টাকা হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর, গাজীপুর এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য ৭ লাখ টাকা হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের জন্য ৫ লাখ টাকা হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের ৬৪টি জেলার জেলাপ্রশাসনের অনুকূলে ‘এ’ ক্যাটাগরির জন্য ২ লাখ টাকা ‘বি’ ক্যাটাগরির জন্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির জন্য এক লাখ টাকা হারে মোট এক কোটি ৭৭ লাখ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞায় অনেককিছু বন্ধ বা সীমিত পরিসরে চালু থাকলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ, দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ, বস্তিবাসী। তাদের তাৎক্ষণিক সহায়তা, খাদ্যের যোগান বিষয়ে ঘোষণায় তেমন কিছুই উল্লেখ থাকে না।
এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, কঠিন লকডাউনের কথা বিবেচনা করেই সরকার এরই মধ্যে ৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে, যা ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছে। মাত্র একসপ্তাহের লকডাউন। তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। হবেও না। এই বরাদ্দ থেকে প্রতিটি কর্মহীন পরিবার হাতে নগদ ৫০০ টাকা পেয়ে যাবেন। তবে করোনা সংক্রামণ রোধ পরিস্থিতি উন্নত না হলে লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে সরকারের তরফ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে আগের মতোই।
© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply