২০১৪ সালে প্রথমবারের মত নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলো বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠের ঐ আসরে ৫ ম্যাচ খেলে ২টি জয় ও ৩টিতে হেরেছিলো বাংলাদেশ। এরপর চারটি আসরে খেললেও, কোন জয় পায়নি টাইগ্রেসরা।
আগামী মাসে শুরু হওয়া নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরে বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য জয়খরা কাটানো। দ্বিতীয় লক্ষ্য সেমিফাইনালে খেলা। এই দুই লক্ষ্য নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাবে বাংলাদেশ।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিলো। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকাপ সড়িয়ে নেয় ক্রিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে পর্দা উঠবে বিশ্বকাপের।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন, ফটোসেশনের আনুষ্ঠানিকতা ছিলো বাংলাদেশের। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘আমি নিজেও চারটি বিশ্বকাপ খেলেছি, এখন পর্যন্ত একটা ম্যাচও জিততে পারিনি। অবশ্যই এবার বিশ্বকাপে আমার ব্যক্তিগতভাবে যেমন লক্ষ্য তেমনি গোটা দলেরই লক্ষ্য হলো- আমরা যেন একটা ম্যাচ জিতে শুরু করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপের মতো আসরে সব দলই ভালো ক্রিকেট খেলার প্রত্যাশা নিয়ে আসে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে লম্বা সময় ধরে আমাদের সবার যে ক্ষুধা বিশ্বকাপে একটি জয়, সেটা যেন পেতে পারি। সেই লক্ষ্যই থাকবে।’
জয়-খরা কাটানোর পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্য স্থির করবে বাংলাদেশ, এমনটাই বললেন নিগার, ‘প্রথম লক্ষ্য পূরণের পর আমরা গতি ফিরে পাবো। আমার কাছে মনে হয় আমাদের যে দল তাতে অবশ্যই সেমিফাইনাল খেলা সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য থাকবে সেভাবেই।’
দেশের ক্রিকেটকে এক ধাপ এগিয়ে নিতে হলে বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে পারফর্ম করার কথা বললেন নিগার, ‘আমাদের ক্রিকেট যদি এক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই তাহলে বিশ্বকাপের চেয়ে বড় জায়গা আর হতে পারে না। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে যারা খেলতে চায় বা স্বপ্ন দেখে যে বাংলাদেশের হয়ে বড় কিছু করবে, তাদের জন্য আমরা ভালো কিছু করতে চাই।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুই ভেন্যু দুবাই ও শারজাহতে হবে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো। এই দুই ভেন্যুতে খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। তবে মূল লড়াইয়ে নামার আগে দুবাইয়ে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দু’টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে উইকেট সর্ম্পকে ধারনা নিতে চান নিগার। তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে আমরা আবু ধাবিতে খেলেছি। সেখানকার উইকেট সুন্দর ছিল। এবার শারজাহ আমাদের কাছে নতুন ভেন্যু। দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে আমরা কম-বেশি ধারণা পাবো। তবে শুধুমাত্র আমাদেরই সমস্যা হবে, তেমন কিন্তু না। প্রতিটি দলেরই একই চ্যালেঞ্জ থাকবে। আমরা যত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবো আমাদের জন্য সুবিধা হবে।’
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ- ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্কটল্যান্ড। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিন স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে টাইগ্রেসরা। সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণের জন্য গ্রুপ পর্বের ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বলে জানান নিগার, ‘সেমিফাইনালে খেলতে হলে শুধু স্কটল্যান্ড নয়, বাকি তিন ম্যাচও জিততে হবে। প্রতিটি দলের বিপক্ষে আলাদা পরিকল্পনা থাকবে। প্রতিটি ম্যাচের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে আমাদের জন্যই ভালো হবে।’
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে নিগার। এখন পর্যন্ত ৯৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে শততম ম্যাচ খেলার রেকর্ড স্পর্শ করবেন নিগার। নিজের মাইলফলকের চেয়ে স্কটিশদের সাথে জয়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন নিগার। তিনি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচটা জিততে চাই। আমার জন্য এটা সব থেকে বেশি স্পেশাল। আমার জন্য এবং আমার দলের জন্য এটা অনেক বড় একটা অর্জন হবে। অবশ্যই একজন খেলোয়াড় হিসেবে শততম ম্যাচ খেলা অনেক বড় ব্যাপার। তবে এখনও জানি না খেলতে পারবো কিনা। যদি সুস্থ থাকি এবং খেলি তাহলে লক্ষ্য থাকবে এটা যেন স্পেশাল হয়ে থাকে, স্মরণীয় হয়ে থাকে সবার জন্য।’
২০ অক্টোবর দুবাইয়ে ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামবে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের।
বাসস
© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply