1. zunaid365@gmail.com : Natore Times :
সংবাদ শিরোনাম :
সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তারেক রহমানকে দেশে আনতে হবে: দুলু সিংড়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৃক্ষ রোপন ও বিতরন তরুণদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতা চান ড. ইউনূস জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আরো সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন: হোয়াইট হাউস ‘দেশে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা হলেই আমার সন্তানের আত্মদান সার্থক হবে’- শহিদ মানিকের বাবা লা লিগা: দারুণভাবে ফিরে এসেও মাদ্রিদের সাথে পেরে উঠেনি আলাভেস দশ বছরের জয়খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন বাংলাদেশের ফের নিষ্ক্রিয় জিমেইল অ্যাকাউন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে সেশনজটের শঙ্কা শত শত অবৈধ ব্লাড ব্যাংকে চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত বিক্রি

ঘূর্ণিঝড়ে এবারই সাগরে কোনো জেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৯ মে, ২০২১

‘এক ঢিলে দুই পাখি শিকার’ বলে একটি কথার বহুল প্রচলন রয়েছে। সেই রকম ঘটনারই উদাহরণ হয়ে উঠেছে বুধবারের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের বেলায়ও। অর্থাৎ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস প্রচণ্ড দাপটের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের বিশাল বুক জুড়ে দেশের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করলেও এবার সাগরে মৃত্যুর ঘটনা শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়িয়েছে। সাগরে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায় রক্ষা মিলেছে বিপুলসংখ্যক জেলের প্রাণহানিও। এজন্য লোকজন বলছেন, এক ঢিলে দুই পাখি শিকার।

সাগরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের থাবায় এবারই কোনো জেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। খবর মিলেনি কোনো মাছধরা নৌকা এবং জেলে নিখোঁজের ঘটনাও। এর আগে যতগুলো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে সবগুলো ঘূর্ণিঝড়েই সাগরে মাছধরা পেশায় নিয়োজিত জেলেরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। প্রায় প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়েই বিপুলসংখ্যক জেলের প্রাণহানি ও নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে একজন জেলে কেবল তার জান হারান না সেই সঙ্গে নৌকা এবং জাল হারিয়েও নিঃস্ব হয়ে পড়েন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে আমরা অত্যন্ত সজাগ ছিলাম। দেশের প্রধান মৎস্য কেন্দ্র যেহেতু কক্সবাজার উপকূলে তাই কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্যদের নিয়ে জেলেদের সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করেছি। এ কারণেই সাগরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে জেলে মৃত্যু বা নৌকাসহ জেলে নিখোঁজ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার বঙ্গোপসাগরে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য টানা ৬৫ দিনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। গত ২০ মে থেকে শুরু হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে কোন মাছ ধরা নৌকা নিষেধাজ্ঞার আওতায় মাছ ধরতে নামবে না। মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকাকালীন সময়েই গত বুধবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানে। তিনি বলেন, মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কারণেই সাগরে কোনো প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেনি।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সারা দেশব্যাপী মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৬৮ হাজার যান্ত্রিক নৌকা। তন্মধ্যে কক্সবাজার জেলায় যান্ত্রিক নৌকা রয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি। তিনি জানান, ইলিশ প্রজনন মৌসুমের ১৫ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসব্যাপী সাগরে মাছধরা নিষেধ ছিল। পরবর্তীতে গত ২০ মে থেকে টানা ৬৫ দিনের জন্য শুরু হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। যা চলবে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত।

তিনি বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা না হলে সাগরে জেলেদের প্রাণহানি এবং জেলেসহ নৌকা নিখোঁজের ঘটনা কোনোভাবেই এড়ানো যেত না। জেলেদের আবহাওয়ার ৯ নম্বর সংকেত দিয়েও দমানো যায় না। যত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আসুক না কেন জেলেরা সাগরে নামবেই।

কক্সবাজার জেলা মাছধরা যন্ত্রচালিত নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন- ‘ঘূর্ণিঝড় এলেই সাগরে জেলেদের প্রাণহানি ঘটে। অনেক নৌকাসহ জেলেরা নিখোঁজ হয়ে পড়ে। ঝড়ের পর থেকেই শুরু হয় জেলেপল্লীগুলোতে স্বজন হারানোর বিলাপ। কিন্তু এবারের পরিস্থিতিটা ছিল ভিন্ন। মাছের প্রজনন রক্ষায় সরকারের ৬৫ দিনের টানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর আঘাতেও অনেক জেলের নিশ্চিত মৃত্যু ঠেকানো গেছে।’

কুতুবদিয়া দ্বীপের মাছধরা নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বহদ্দার জানিয়েছেন, ১৯৯১ সালের পরও যতগুলো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে সবগুলোতেই দ্বীপের জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু বুধবারের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের থাবা থেকে রক্ষা পেয়েছে জেলেরা। অপরদিকে কক্সবাজার জেলা যান্ত্রিক নৌকা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সরকার ৬৫ দিনের জন্য মাছধরার ‌ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় একদিকে সাগরের মাছের বংশ বৃদ্ধি নিশ্চিত করা হয়েছে তেমনি এই নিষেধাজ্ঞার কারণেই উপকূলের জেলেরাও জানমাল নিয়ে অক্ষত রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ত্রিশ বছর আগে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল শতাব্দীর প্রলয়ংকরি যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল সেই ঘূর্ণিঝড়ে কেবল মাত্র কক্সবাজার উপকুলের ২ লাখ জেলে হারিয়েছিল তাদের নৌকা ও জালসহ সর্বস্ব। সেই ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কক্সবাজার জেলায় সরকারি হিসাবেই প্রাণ হারিয়েছিল ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। যার মধ্যে কয়েক হাজার ছিল জেলে। সেই ঘূর্ণিঝড়টিও এসেছিল পূর্ণিমা তিথির ভরা কাঠালের (ভরা জোয়ার) সময়। আর ত্রিশ বছর পর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসও অনুরূপ পূর্ণিমা তিথিতে গত বুধবার আঘাত হেনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।

Site Customized By NewsTech.Com