নাটোর পৌর এলাকায় নেসকোর প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনে আসা কর্মচারীদের ধাওয়া দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা৷ এতে মিটার স্থাপন বন্ধ রেখে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে নেসকোর কর্মচারীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার (১৯শে ফেব্রুয়ারী) মসজিদ মসজিদে জমায়েত ও শনিবার(২০শে ফেব্রুয়ারী) নেসকোর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার(১৮ই ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নাটোর শহরে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও পথসভা থেকে এ ঘোষণা দেন নাটোর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল৷ এদিন জেলার বাম সংগঠনের নেতারা যোগ দেন কর্মসূচীতে।
জানা যায়, নাটোর পৌর এলাকায় নেসকোর প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচী পালন করা হয়। এদিন সকালে নেসকোর কর্মচারীরা শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও লালবাজার এলাকার বাসাবাড়িতে মিটার স্থাপনের জন্য যান। কিন্ত তাদের দেখে গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়ে একত্রিত হন৷ এক পর্যায়ে ধাওয়া দিলে এলাকা ত্যাগ করেন নেসকোর কর্মচারীরা।
এদিকে, কানাইখালী এলাকায় মিছিল শেষে সমাবেশে পুলিশ বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল, জেলা ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন, জাপা নেতা আশরাফুজ্জামান মুন্না, জেলা সিপিবির আহ্বায়ক দেবাশীষ রায়, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি আসাদুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম নান্টুসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ।
পথসভায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল বলেন, ‘আমরা কোনভাবেই নাটোরে প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন করতে দেবো না। আমরা জনগণের স্বার্থে আন্দোলন করছি। আমরা এ আন্দোলনে বড় বড় ব্যবসায়ীদের অংশ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। নেসকো কার্যালয় ঘেরাওয়ে কাজ না হলে আমরা প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবো। সর্বস্তরের মানুষদের নিজ স্বার্থে এই গণআন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
নেসকো নাটোর কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে, নাটোর পৌর এলাকায় ২৮ হাজার প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪০০ মিটার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে নতুন মিটার বসানো গ্রাহকরা নানা অভিযোগ তুলেছেন।
শহরের প্রবাল সুপার মার্কেটের নাটোর ইলেকট্রনিকের সত্বাধিকারী আব্দুল মতিন বলেন, ‘মিটার স্থাপনের দিন ২০০ টাকা রিচার্জ করা ছিলো। কয়েক দিনে ৪ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়েছে আর ৬০ টাকা কেটে নেয়া হয়েছে। পুরাতন মিটারে ইউনিটপ্রতি যে চার্জ করা হতো তা নতুন মিটারের অর্ধেক। একটি স্বল্প ওয়াটের বাতি ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ রেখেছি।’
ফারদিন রাব্বি অটোর সত্বাধিকারী কায়সার রিজভিও একই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভৌতিক বিলের দোহাই দিয়ে প্রি-পেমেন্ট মিটারের যৌক্তিকতা দেখাচ্ছে নেসকো। অথচ স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুন বিল চার্জ করা হচ্ছে এখানেও। তাহলে কিভাবে এই মিটার গ্রাহকদের জন্য লাভজনক?’
নেসকো’র নাটোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল আজীম ইমান বলেন, ‘প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত সরকারের। আমারা বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ মাত্র। নতুন পদ্ধতি হওয়ায় গ্রাহকদের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে গ্রাহকরা যাতে আগ্রহী হয় সেজন্য আমরা তাদের উদ্বুদ্ধকরণে কাজ করছি। কার্যালয় ঘেরাওয়ের কিছু জানি না।
© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply