বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে বলে মনে করে দেশের বেশিরভাগ মানুষ। সুশাসন ও দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) একটি জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ মানুষ মনে করে দেশে দুর্নীতি কমেছে। আর দুর্নীতি বেড়েছে বলে মন্তব্য করে ৪০ শতাংশ।
২৪ নভেম্বর টিআই-এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এটির শিরোনাম ‘গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার এশিয়া ২০২০: সিটিজেন্স ভিউজ অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্সেস অফ করাপশন’।
তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখা টিআইবি এখনও জরিপটি প্রকাশ করেনি।
এশিয়ার ১৭টি দেশে ২০ হাজার মানুষের মধ্যে জরিপ চালিয়েছে ট্রান্সপোরেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। তারা যে জনসেবা খাতগুলো নিয়ে জরিপ চালিয়েছে সেগুলো হলো: পুলিশ, আদালত, সরকারি হাসপাতাল, জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম ও গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মতো দরকারি সেবাখাত।
২০১৯ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়। অংশগ্রহণকারীদের তার আগের ১২ মাসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে বলা হয় জরিপে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে দ্রুত সেবা পাওয়ার জন্য অংশগ্রহণকারীরা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
এই জরিপ অনুযায়ী, জনধারণার দিক দিয়ে ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতি অনেক কম।
সরকারি সেবা পেতে ভারতে ঘুষ দেয়ার হার ৩৯ শতাংশ। এটা এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই হার ২৪ শতাংশ।
TI-report-NB
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো জনসেবা খাতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয় ভারতে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয় পুলিশকে।
ভারতের নাগরিকদেরও সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয় পুলিশকে।
বাংলাদেশে যেখানে জরিপে অংশ নেয়াদের বেশিরভাগ দুর্নীতি কমেছে বলে মত দিয়েছে, সেখানে ভারতে এই সংখ্যাটি অনেক কম। সেখানে মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন দুর্নীতি কমেছে। আর ৪৭ শতাংশ মনে করেন বেড়েছে।
জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করে দুর্নীতি দমন সংস্থা ভালোভাবে কাজ করছে। ভারতে এই মত পাওয়া গেছে ৭৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে ৮৭ শতাংশ মানুষ মনে করে দুর্নীতি ঠেকাতে সরকার ভালোভাবে কাজ করছে। ভারতে এই হার পাওয়া গেছে ৬৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে ৭৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন সরকারি দুর্নীতি একটি বড় সমস্যা। ভারতে এটিও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। সেখানে ৮৯ শতাংশ মানুষই মত দিয়েছেন. সরকারি দুর্নীতিই বড় সমস্যা।
ঘুষে কেবল টাকায় নয়, যৌন সুবিধাও নেয়া হয় বলে উঠে এসেছে জরিপে। একে বলা হচ্ছে সেক্সটরশন।
ক্ষমতা ব্যবহার করে যৌন সুবিধা নেয়া বা কোনো কাজ পেতে যৌনতা ব্যবহার করার বিষয়টি বোঝার জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
এক্ষেত্রেও ভারতের তুলনায় ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। এই সূচকে বাংলাদেশে হার ৯ শতাংশ। ভারতে যা ১১ শতাংশ।
জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারত-দুই দেশেই কাজ পেতে স্বজনপ্রীতি ঘটে। বাংলাদেশে ২২ শতাংশ জানিয়েছে এই সমস্যার কথা। তবে ভারতে এই হার দ্বিগুণেরও বেশি। সেখানকার শতকরা ৪৬ শতাংশ মানুষই বলেছে স্বজনপ্রীতির কথা।
© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply