করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামীকাল সোমবার থেকে সীমিত আকারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এতে দোকানপাট, বিপণিবিতান, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। তবে খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা খোলা থাকবে। তবে বসে খাওয়া যাবে না।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আজ রোববার বিকেলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই বিধিনিষেধ কাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে ১ জুলাই সকাল ছয়টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
করোনায় মৃত্যুহার বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতভাগ লকডাউনের বিকল্প নেই। লকডাউন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো খাতকে যেন ছাড় দেওয়া না হয়। তাহলেই ৭-১০ দিন পর থেকে হয়তো আমরা ব্যবসা করতে পারব। কারণ, ঈদের আগে সময়গুলো ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দেওয়ান আমিনুল ইসলাম, সভাপতি, নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি
দোকানপাট ও বিপণিবিতান বন্ধের ঘোষণায় নতুন করে লোকসানের আশঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ, আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মীয় এই উৎসব ঘিরে কয়েক শ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হয়। তা ছাড়া পোশাক, রেফ্রিজারেটরসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী বিক্রিও হয় প্রচুর। সব মিলিয়ে ঈদকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আবার হুমকির মধ্যে পড়ল।
আগামীকাল থেকে দোকানপাট ও বিপণিবিতান বন্ধের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘লকডাউন আরোপ করায় ঈদের আগে ব্যবসায়ীরা আরেক দফা সংকটে পড়বেন। যেহেতু করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে, সেহেতু আমরা সরকারের আদেশ পরিপালন করব। আগামী মাসে পবিত্র ঈদুল আজহার আগে আমাদের কর্মীদের বেতন ও উৎসব ভাতা দিতে হবে। সেদিকে সরকার যেন খেয়াল রাখে।’
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, মাঠপর্যায়ে মাস্ক পরার বিষয়টি যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে কঠোরভাবে নিশ্চিত করা যেত, তাহলে লকডাউনের প্রয়োজন হতো না। লকডাউনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাঁদের দুঃখকষ্ট দেখার কেউ নেই।
অন্যদিকে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, করোনায় মৃত্যুহার বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতভাগ লকডাউনের বিকল্প নেই। লকডাউন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো খাতকে যেন ছাড় দেওয়া না হয়। তাহলেই ৭-১০ দিন পর থেকে হয়তো আমরা ব্যবসা করতে পারব। কারণ, ঈদের আগে সময়গুলো ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত শুক্রবার রাতে সরকারের এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। এ সময় সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে।
তবে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সোমবার থেকে সীমিত ও ১ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে। কঠোর এই লকডাউনেও রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাসহ শিল্পকারখানা চালু থাকবে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও পণ্য পরিবহন যথারীতি চলবে। ব্যাংক কার্যক্রমও সীমিত পরিসরে চালু থাকবে।
(prothomalo)
© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply