1. zunaid365@gmail.com : Natore Times :
সংবাদ শিরোনাম :
সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তারেক রহমানকে দেশে আনতে হবে: দুলু সিংড়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৃক্ষ রোপন ও বিতরন তরুণদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতা চান ড. ইউনূস জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আরো সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন: হোয়াইট হাউস ‘দেশে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা হলেই আমার সন্তানের আত্মদান সার্থক হবে’- শহিদ মানিকের বাবা লা লিগা: দারুণভাবে ফিরে এসেও মাদ্রিদের সাথে পেরে উঠেনি আলাভেস দশ বছরের জয়খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন বাংলাদেশের ফের নিষ্ক্রিয় জিমেইল অ্যাকাউন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে সেশনজটের শঙ্কা শত শত অবৈধ ব্লাড ব্যাংকে চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত বিক্রি

স্বাবলম্বী হচ্ছে রোহিঙ্গারা

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সাত বছরের শিশু ফাতেমা জাত-পাত, ধর্ম-বর্ণ বোঝে না। বোঝে বর্ণমালা। জানে নিজের ভাষার অক্ষরের টানে উচ্ছল হাসিতে মেতে উঠতে। কপালে ছোট্ট দুটি হাত ঠেকিয়ে নিজের ভাষায় কিছু একটা বলতে চাইল। তার শিক্ষক রায়হান অনুবাদ করে দিলেন। ফাতেমা বলছিল- স্যার, একটা খাতা কিনে দেবেন? একজোড়া লাল জুতো? আমি আরও অনেক পড়তে চাই।

ভাসানচরের রোহিঙ্গা আবাসস্থলের স্টু্কলে যারা পড়তে আসে, তাদের সবারই খালি পা। বই একটা কি দুটো থাকলেও খাতা নেই কারও হাতে। কারণ, তাদের বাবা-মায়ের কিছুই কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। স্কুল থেকে খাতা পাওয়ার আশায় আছে তারা। তবে ভাসানচরের এই হতদরিদ্র শিশুদের বাবা-মায়েরা ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এখানকার রোহিঙ্গা পুরুষদের হাতে-কলমে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সরেজমিন এসব প্রশিক্ষণের নানা উদ্যোগ চোখে পড়েছে।

ঘুরে ঘুরে যা দেখা গেল :ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৯ নম্বর শেল্টার হাউসের সামনে দেখা গেল প্রমিত বাংলায় কথা বলছেন দু’জন মানুষ। সামনে দাঁড়িয়ে শুনছেন ৪০-৫০ জন। আরও কাছে গিয়ে জানা গেল রোহিঙ্গাদের পুকুরে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড-বিআরডিবির দুই কর্মকর্তা। শেল্টার হাউসের সামনেই একটি পুকুর। তার পাশে রোহিঙ্গা নিবাসের গুচ্ছ গুচ্ছ ঘর। ভাসানচরে রোহিঙ্গা আবাসন কেন্দ্রটিকে ভাগ করা হয়েছে ১২০টি ক্লাস্টার বা গুচ্ছে। প্রতিটি গুচ্ছের সামনে আছে একটি পুকুর ও চাষের জমি। বিআরডিবির যুগ্ম পরিচালক (মাঠ কার্যক্রম) সুকুমার চন্দ্র বিশ্বাস জানালেন, ক্লাস্টারের সামনের পুকুরে মাছ চাষ করার জন্যই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্য হচ্ছে, এখানে বসবাসকারীরা যাতে মাছ চাষ করে নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারেন, সম্ভব হলে কিছু আয়ও করতে পারেন। প্রতি দলে ৫০ জনকে নিয়ে সবাইকেই পর্যায়ক্রমে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মাছ চাষের পাশাপাশি সবজি চাষ এবং নারীদের সেলাই কাজেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বাংলায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা এখন মোটামুটি বাংলা বোঝে। প্রশিক্ষণ নিতে তাদের সমস্যা হচ্ছে না।

শেল্টার হাউসের চার তলায় দেখা গেল সেলাই প্রশিক্ষণ চলছে একটি সুপরিসর ক্লাস রুমে। উপস্থিত রয়েছেন ৫০ রোহিঙ্গা নারী। তাদের প্রায় অর্ধেকের হাতে সেলাই মেশিন। সেলাই মেশিনে কাজও চলছে। প্রশিক্ষক তাহমিনা আক্তার জানান, ৫০ জন করে নিয়ে একটি ক্লাসের পরিকল্পনার ভিত্তিতে এই প্রশিক্ষণ চলছে। মেয়েদের জামা, ছেলেদের পাঞ্জাবি, প্যান্ট তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে প্রাথমিকভাবে। এরপর বুটিকস এবং কাপড়ে নকশা তোলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণার্থী রোজী জানালেন, তিনি কক্সবাজার ক্যাম্পে থাকার সময় অল্পস্বল্প সেলাইয়ের কাজ করতেন। এখন ভাসানচরে আরও ভালো করে কাজ শেখার সুযোগ পাচ্ছেন। কাজটা ভালো করে শেখা হলে তার নিজের আয়ের পথ হবে। ছেলেটাকেও বেশি ক্লাস পর্যন্ত পড়ালেখা করাতে পারবেন।

রোহিঙ্গা নারীদের সেলাইয়ের কাজ শেখাচ্ছে একলাব (অ্যালায়েন্স ফর কো-অপারেশন অ্যান্ড লিগ্যাল এইড, বাংলাদেশ) নামে একটি এনজিও। সুপরিচিত দেশি ব্র্যান্ড কে-কদ্ধাফটও তিন মাসের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তাদের প্রশিক্ষণের মধ্যে আছে হ্যান্ডিক্রাফট, ব্লক, প্রিন্ট ও বুটিকস।

ওরা আরও পড়তে চায় :রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জন্য ২৪ নম্বর শেল্টার হাউসে স্থাপন করা হয়েছে উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্র। এই কেন্দ্রটিও পরিচালনা করছে একলাব। এখানে তিনটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে। একটি শ্রেণিকক্ষের শিক্ষক রায়হান জানালেন, তিনি মিয়ানমারে থাকার সময়ই ম্যাট্রিক (মাধ্যমিক) পাস করেছেন। ২০১৭ সালে কক্সবাজারে আসার পর কোনো কাজ ছিল না হাতে। ভাসানচরে এসে একলাবের এই কাজ নিয়েছেন। শিশুদের বার্মিজ, ইংরেজি, অঙ্ক এবং লাইফস্টাইল ডেভেলপমেন্ট শেখাচ্ছেন। তাকে দিনে ৩৫০ টাকা করে সম্মানী দেওয়া হয়। তার সঙ্গে কথা বলার সময় এগিয়ে এলো শিক্ষার্থী ফাতেমা। সে জানতে চাইল- তাদের আরও বড় স্টু্কলে পড়ানো হবে কিনা। সে আরও পড়তে চায়। বড় স্টু্কলের কথা এই শিশুরা কীভাবে জানল? তাদের ১৯ বছর বয়সী শিক্ষক রায়হান জানালেন- তিনি পড়ানোর সময় শিশুদের সঙ্গে গল্প করেন। এভাবেই তারা জেনেছে, এরচেয়ে অনেক বড় বড় স্কুল আছে। যেখানে পড়লে জীবনে অনেক বড় হওয়া যায়।

একলাবের স্পট ম্যানেজার জয়নুল আবেদিন জানান, ৩৫ বছর ধরে তারা দুর্গম অঞ্চল যেমন হাতিয়া, সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়ার মতো এলাকায় উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভাসানচরে তাদের কাজ শুরু হয়েছে এক মাস আগে।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© স্বত্ত্বঃ নাটোর টাইমস: ২০১৭-২০২৪ --- “নাটোর টাইমস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।

Site Customized By NewsTech.Com